অর্থ : পবিত্র সেই সত্তা, যিনি আমাদের জন্য এই বাহনকে বশীভূত করে দিয়েছেন। তাঁর সাহায্য ছাড়া একে বশীভূত করার ক্ষমতা আমাদের ছিল না। আমরা সকলে তাঁরই কাছে ফিরে যাব।
৩. বাসা বা বিমানবন্দর থেকে ইহরামের কাপড় পরুন এবং এই নিয়ত করুন- ‘হে আল্লাহ আমি আপনার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য হজ/ওমরার নিয়ত করেছি। তা সহজ করুন এবং কবুল করুন।’
অর্থ : আমি হাজির হে আল্লাহ! আমি হাজির, আমি হাজির। আপনার কোনো শরিক নেই। আমি হাজির। নিশ্চয়ই সকল প্রশংসা ও নেয়ামত আপনারই এবং সকল রাজত্ব আপনার। আপনার কোনো শরিক নেই। (বুখারী, ১৫৪৯)
৫. বিমানে ওঠার সময় উপরোল্লিখিত সফরের দোয়া পড়ুন এবং বিমান থেকে জেদ্দা বিমানবন্দর নজরে এলে এই দোয়া পড়ুন-
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা খায়রা হাজিহিল কারয়াতি ওয়া খায়রা মা ফিহা, ওয়া আউজুবিকা শারবাহা ওযা শাররা মা ফীহা।
অর্থ : হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে এই শহরের এবং এর অভ্যন্তরস্থ সব জিনিসের মঙ্গল কামনা করছি। এবং এর ও এর অভ্যন্তরস্থ সব অকল্যাণ হতে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।
অর্থ : হে আমার প্রতিপালক, যেখানে যাওয়া শুভ ও সন্তোষজনক, আপনি আমাকে সেখানে নিয়ে যান এবং যে স্থান হতে বের হয়ে আসা শুভ ও সন্তোষজনক, আপনি আমাকে সেখান থেকে বের করে আনুন এবং আপনার পক্ষ থেকে আমাকে সাহায্যকারী শক্তিদান করুন।
অর্থ : হে আল্লাহ, এটা আপনার সুরক্ষিত পবিত্র স্থান। এখানে প্রবেশকারী যে কেউ আপনার নিরাপত্তা পায়। সুতরাং আমার গোশত, রক্ত, অস্থি ও চর্মকে আগুনের জন্য হারাম করে দিন।
৮. মসজিদে হারামে প্রবেশের সময় অন্যান্য সুন্নাত আদায় করে এই দোয়া পড়ুন-
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মাগফির লী যুনূবী, ওয়াফতাহ লী
আবওয়াবা রাহমাতিকা।
অর্থ : হে আল্লাহ, আমার গোনাহসমূহ ক্ষমা করুন এবং আপনার রহমতের দরজাসমূহ আমার জন্য খুলে দিন।
অর্থ : হে আল্লাহ, আপনার এই ঘরের বড়ত্ব, সম্মান ও মর্যাদা এবং শান শওকত বাড়িয়ে দিন। এবং হজ ও ওমরাকারীদের মধ্যে যে এ ঘরের সম্মান ও ইহতিরাম করবে, তার সম্মান, মর্যাদা, মহত্ব ও নেকি বাড়িয়ে দিন। হে আল্লাহ আপনি শান্তির মালিক, সকল শান্তি আপনার পক্ষ থেকেই। হে আমাদের রব, শান্তির সঙ্গে আমাদের বাঁচিয়ে রাখুন। (আল কিরা, ২৫৫)
24 February 2022, 9:00 PM
হজ ও ওমরাকালীন দোয়াসমূহ :
১. তাওয়াফ শুরু করার আগে হাজরে আসওয়াদের কোনায় এসে এভাবে নিয়ত করুন- ‘হে আল্লাহ, আমি আপনার সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে হজ/ওমরার তাওয়াফ করছি। আমার জন্য তা সহজ করুন এবং কবুল করুন।’
২. এরপর হাত দ্বারা হাজরে আসওয়াদের দিকে ইশারা করে পড়ুন-
অর্থ : হে আল্লাহ (আমি তাওয়াফ শুরু করছি) আপনার প্রতি ঈমান এনে আপনার কিতাবকে সত্যায়ন করে এবং আপনার নবী মোহাম্মদ (সা.)-এর অনুসরণ করে। (মাজমউয যাওয়াইদ, ৫৪৭০)। বি.দ্র. তাওয়াফে এমন কোনো নির্দিষ্ট দোয়া নেই, যা ছাড়া তাওয়াফ সহি হবে না। অতএব, যেকোনো দোয়া পড়া যাবে। তবে এখানে হাদিস ও আসার থেকে কিছু দোয়া উল্লেখ করা হয়েছে। এগুলো পড়া উত্তম।
৪. রসুলুল্লাহ (সা.) রুকনে ইয়ামানি ও হাজরে আসওয়াদের মাঝে এ দোয়া পড়তেন-
অর্থ : হে আমাদের রব, আপনি আমাদের দুনিয়াতে কল্যাণ দান করুন ও আখিরাতে কল্যাণ দান করুন এবং আমাদের জাহান্নামের আজাব হতে রক্ষা করুন। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা)।
৫. রসুল (সা.) হাজরে আসওয়াদ ও মাকামে ইবরাহিমের মধ্যে এই দোয়া পড়তেন-
অর্থ : হে আল্লাহ, যে রিজিক আপনি আমাকে দান করেছেন, তাতেই আমাকে তুষ্ট রাখুন ও এতে বরকত দান করুন এবং আমার থেকে যেসব নেয়ামত দূর হয়ে গেছে এর উত্তম বদলা আমাকে দান করুন। (মুসতাদরাকে হাকেম)।
অর্থ : আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই। তিনি অদ্বিতীয়, তাঁর কোনো শরিক নেই। বিশ্বময় তাঁর রাজত্ব আধিপত্য। সব প্রশংসা তাঁরই। আর তিনিই সর্বশক্তিমান। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা)।
৭. জমজমের পানি পানের সময় শুরুতে বিসমিল্লাহ ও শেষে আলহামদুলিল্লাহ বলুন এবং পান করার আগে-পরে এই দোয়া পড়ুন-
অর্থ : নিশ্চয়ই সাফা ও মারওয়া আল্লাহর নিদর্শনসমূহের অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং যে ব্যক্তি বায়তুল্লায় হজ কিংবা ওমরা করবে, এই দুটির তাওয়াফে (সাঈতে) তার জন্য দোষ নেই। কেউ স্বেচ্ছায় ভালো কাজ করলে নিশ্চয় আল্লাহ পুরস্কারদাতা সর্বজ্ঞ।
১০. সাফা পাহাড়ে উঠে বায়তুল্লাহর দিকে ফিরে তিনবার ‘আল্লাহু আকবর’ বলে এই দোয়া পড়ুন-
অর্থ : আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই। তিনি অদ্বিতীয়, তাঁর কোনো শরিক নেই। বিশ্বময় তাঁর রাজত্ব আধিপত্য। সকল প্রশংসা তাঁরই। তিনিই জীবন দান করেন এবং মৃত্যু ঘটান, সব কল্যাণ তাঁর হাতে। আর তিনি সর্বশক্তিমান। (সহিহ মুসলিম, হাদিস ১২১৮)
১১. সাফা-মারওয়ায় সাঈ করার সময় সবুজ পিলারদ্বয়ের মধ্যে দ্রুত চলার সময় এই দোয়া পড়ুন-
১৩. আরাফার ময়দানে বিশেষ কোনো দোয়া বা জিকির পড়া জরুরি নয়। সুবাহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবারসহ যেকোনো দোয়া ও জিকির নিজ ভাষায় করা যেতে পারে। তবে হাদিস ও আছারে এক্ষেত্রে কিছু দোয়া পড়ার কথা উল্লেখ রয়েছে। যেমন :
অর্থ : আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই। তিনি অদ্বিতীয় তাঁর কোনো শরিক নেই। বিশ্বময় তাঁর রাজত্ব আধিপত্য। সকল প্রশংসা তাঁরই। আর তিনিই সর্বশক্তিমান। হে আল্লাহ, আপনি আমাকে হেদায়েতের পথে পরিচালিত করুন। আমাকে তাকওয়ার মাধ্যমে পবিত্র করে দিন এবং দুনিয়া ও আখিরাতে আমাকে ক্ষমা করে দিন।
১৪. রমি (শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ) করার সময় এ দোয়া পড়ুন-
অর্থ : সেই আল্লাহর নামে, যিনি মহান। শয়তানকে অপদস্থ করার উদ্দেশ্যে এবং মেহেরবান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য আমি এ কঙ্কর মারছি। হে আল্লাহ আমার হজ কবুল করুন, গোনাহরাজি ক্ষমা করুন। প্রচেষ্টাকে ফলবতী করুন এবং এই ব্যবসায়কে এমন ব্যবসায় পরিণত করুন যাতে ক্ষয় নেই।
জিয়ারতে মদিনার দোয়াসমূহ
১. সবুজ গম্বুজ নজরে পড়ামাত্র গাড়ি হতে নেমে দরুদ পড়ুন এবং এ দোয়াটি পড়ুন-
অর্থ : আল্লাহর নামে (এ শহরে প্রবেশ করছি) আল্লাহ যা কবুল করেছেন। আল্লাহর সাহায্য ছাড়া নেক কাজ করা এবং গুনাহর কাজ থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। হে আল্লাহ, আপনি আমাকে সত্য পথে প্রবেশ করান এবং সত্য পথেই বের করে আনুন। হে আল্লাহ আমার জন্য আপনার রহমতের দরজাসমূহ খুলে দিন।
অর্থ : আমি আল্লাহর নিকট সব গুনাহের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং আমি তাঁরই অভিমুখী হই। মহান পরাক্রমশালী আল্লাহর সাহায্য ছাড়া নেক কাজ করা ও অন্যায় কাজ হতে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়।
৪. অতঃপর রসুলের (সা.) শাফায়াত কামনা করুন। এভাবে বলুন-
অর্থ : ইয়া রসুলুল্লাহ আমি শুনেছি আল্লাহতায়ালা বলেন, আর যদি তারা নিজেদের ওপর জুলুম করার পর আপনার নিকট উপস্থিত হতো এবং আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাইত এবং রসুল ও তাদের জন্য ক্ষমা চাইতেন, তবে অবশ্যই তারা আল্লাহকে তাওবা কবুলকারী, করুণাময় পেত। তাই আপনার কাছে আমি এসেছি, আল্লাহর নিকট তাওবা ও ক্ষমা প্রার্থনাকারী হয়ে এবং আমার রবের কাছে আপনার সুপারিশ কামনাকারী হয়ে।
৫. হজরত আবু বকর (রা.)-এর মাজারের সামনে এসে সালাম পেশ করুন-
অর্থ : হে আল্লাহর রসুলের খলিফা, আপনার প্রতি সালাম (শান্তি) বর্ষিত হোক। এবং বর্ষিত হোক আল্লাহর রহমত ও বরকত। এবং আমাদের পক্ষ থেকে আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন।
অর্থ : হে আমিরুল মুমিনীন, আপনার প্রতি সালাম (শান্তি) বর্ষিত হোক। এবং বর্ষিত হোক আল্লাহর রহমত ও বরকত। এবং আমাদের পক্ষ থেকে আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন।
অর্থ : হে আমাদের সরদার জিবরাইল, আপনার প্রতি সালাম বর্ষিত হোক। হে আমাদের সরদার মিকাঈল, আপনার প্রতি সালাম বর্ষিত হোক। হে আমাদের সরদার ইসরাফিল, আপনার প্রতি সালাম বর্ষিত হোক। হে আমাদের সরদার আজরাইল, আপনার প্রতি সালাম বর্ষিত হোক। আসমান ও জমিনে বসবাসকারী আল্লাহর নৈকট্যপ্রাপ্ত হে ফেরেশতাগণ, আপনাদের সবার প্রতি সালাম বর্ষিত হোক। এবং বর্ষিত হোক আল্লাহর রহমত ও বরকত।
৮. জান্নাতুল বাকিতে গিয়ে সাহাবিদের নাম নিয়ে সালাম পেশ করুন। এরপর সকলকে উদ্দেশ করে বলুন-
অর্থ : হে পবিত্র স্থানের মুমিন ও মুসলমান অধিবাসীগণ, আপনাদের প্রতি সালাম বর্ষিত হোক। আল্লাহর ইচ্ছায় আমরা আপনাদের সঙ্গে মিলিত হব। আমরা আল্লাহর কাছে আপনাদের ও আমাদের সকলের জন্য মাগফিরাত কামনা করছি। আমাদের পক্ষ হতে আল্লাহ তায়ালা আপনাদের উত্তম প্রতিদান দান করুন।
অর্থ : আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই। তাঁর কোনো শরিক নেই। তাঁরই জন্য সকল রাজত্ব ও প্রশংসা এবং তিনি সব কিছুর ওপর সামর্থ্যবান। আমাদের পালনকর্তার কাছে আমরা আবার ফিরে আসব, তাঁরই কাছে আমরা অভিমুখী হই এবং তাঁর প্রতি সিজদা আদায় করি। আল্লাহ তাঁর প্রতিশ্রুতি পূরণ করেছেন এবং বান্দাকে সাহায্য করেছেন। -সহীহ বুখারী, হাদিস-১৭৯৭
হজের সময় মক্কা-মদিনায় দোয়া কবুলের বিশেষ স্থানসমূহ
১. মাতাফ-তাওয়াফের জায়গা।
২. মুলতাযাম-কাবা ঘরের দরজা ও হাজরে আসওয়াদের মধ্যবর্তী স্থান।
৩. মীযাবে রহমতের নিচে।
৪. জমজম কুয়ার কাছে।
৫. মাকামে ইবরাহিমের পেছনে।
৬. সাফা-মারওয়া পাহাড়দ্বয়ের উপরে।
৭. রুকনে ইয়ামানি ও হাজরে আসওয়াদের মধ্যবর্তী স্থানে। ৮. মিনার মসজিদসমূহে ও মিনার ময়দানে।
Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.
0 coment rios: